এস আই সুমনঃ বগুড়ার শিবগঞ্জে বাড়ির আঙ্গিনায় চুল ছেড়ে শুকানোর অপরাধে সানজিদা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূকে মাথার চুল কেটে ও মারধর করে ঘরে তালাবন্দী রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
গত রবিবার রাত ৯ টায় শিবগঞ্জ পৌর এলাকার কানুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ও থানা সুত্রে জানা গেছে, গৃহবধুকে সারারাত ঘরে তালাবদ্ধ রাখা হয়েছিল।
পরে পুলিশ খবর পেয়ে সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে নির্যাতিত গৃবধুকে উদ্ধার ও জা মিনেরা বেগম (৩৫) কে আটক করে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধুর পিতা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর থেকে অপর দুই আসামী গৃহবধুর স্বামী জিলস্নুর রহমান (৩২) ও শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেওয়া (৫৫) পলাতক আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্বামী জিল্লুর রহমান শিবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার ল্যাব এসিসটেন্ট পদে কর্মরত আছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কিচক হরিপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সানজিদা আক্তারকে প্রায় ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন জিল্লুর রহমান।
তাদের ২ বছর বয়সী জমজ দুই কন্যা সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবিতে ও নানা অজুহাতে সানজিদা আক্তারের ওপর নির্যাতন শুরু করে আসছিল স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকাবাসী ও পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন নির্যাতন দেখে আসছে। সর্বশেষ গত রবিবার বিকেলে গোসলের পর আঙ্গিনায় চুল ছেড়ে দিয়ে শুকানোর অপরাধে বেদম মারপিট করে গৃহবধুর স্বামী।
পরে রাত ৯ টার দিকে আবারও মারধর করে শ্বাশুড়ি-জা ও স্বামী মিলে চুল কেটে দিয়ে ঘরে তালাবন্দী করে রাখে। নির্যাতিত গৃহবধূ সানজিদা বলেন, আমার বাবা গরীব মানুষ। এর আগে অনেক টাকা যৌতুক দিয়েছে।
তারপরেও যৌতুকের কারনে মাঝে মাঝেই মারধর করতো। আমি অসহায় বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে সব মুখ বুজে সহ্য করে গেছি।
রবিবার বিকেলে আঙ্গিনায় চুল শুকানোর অপরাধে আমার স্বামী-জা ও শ্বাশুড়ি মিলে মারধর করে চুল কেটে দিয়ে সারারাত ঘরে আটকে রাখে।
আমাকে এক গ্লাস পানিও খেতে দেয়নি। পরে পরেরদিন পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। এছাড়াও তিনি তার স্বামীর বিরম্নদ্ধে অন্য একটি মেয়ের সাথে পরকীয়ার অভিযোগ করেন।
শিবগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) জাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনায় গৃহবধুর জা’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।