বগুড়া উত্তর ডটকম: বগুড়া শিবগঞ্জে গলায় ফাঁস দিয়ে এক যুবতির মৃত্যু, এলাকায় শোকের ছায়া।
জানা যায় শিবগঞ্জ উপজেলার গুজিয়া তেলিপাড়া গ্রামের সাজুর কন্যা সারমিন আক্তার (১৯) পরিবারের সদস্যর উপর অভিভান করে সোমবার দূপূর ১২ টার দিকে সবার অগোচরে গলায় ওড়না দিয়ে তীরে সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে।
বিষয়টি শিবগঞ্জ থানা পুলিশ খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ছানোয়ার এর নির্দেশে এসআই আনোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। পরিবারের লোকজন জানায় বাড়িতে কেহ না থাকার সুযোগে সারমিন আক্তার গলায় ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ব্যাপারে নিহতের নানা আশরাফ আলী থানায় ইউডি মামলা করেন।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ছানোয়ার এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা নেওয়া হয়েছে। সারমিন এর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
পরবর্তী আপলোড পেতে কমেন্ট_এবং_শেয়ার করে পাশে থাকুন।
বগুড়া উত্তর ডটকম: ২৬ জানুয়ারি রাত দশটা। নিজ অফিসে বসে দাপ্তরিক কাজকর্ম সারছিলেন বগুড়া সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী। তার মুখে শোনা কথো গুলোই এখানে তুলে ধরা হলো, এমন সময় অফিসে এলো ছোটভাই সাংবাদিক নৃত্যশিল্পী সজল এবং পরিচিত আরেক ভদ্রলোক হামিদ ভাই। তাদের সাথে এক ভদ্রলোক একজন ভদ্রমহিলা এবং একটি বোরকাচ্ছাদিত বালিকা। বয়স ১৩/১৪ ।
সজলকে জিজ্ঞাসা করলাম ঘটনা কি? তখন সাথের লোকটি কথা বলা শুরু করলেন। তার ভাষ্যমতে তার নাম মোঃ সৌখিন মিয়া। তিনি বগুড়া ময়মনসিংহ রুটের যুগান্তর বাসের একজন সুপারভাইজার। বাড়ি বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নে।
গত ১৭ তারিখে তার বাস ময়মনসিংহ থেকে ছাড়ার সময় এই মেয়েটি উঠেছিল পাবনা যাবার নাম করে। মেয়েটির হাটিকুমরুল চাররাস্তা (সিরাজগঞ্জ রোড) মোড়ে নামার কথা ছিল। আসার পথে এলেঙ্গা এবং অন্যান্য এলাকায় যানজটের কারনে গাড়ি সিরাজগঞ্জ রোডে আসতে রাত ১১ টা বেজে যায়।
নামার সময় মেয়েটা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। সে নামতে রাজি না হওয়ায় সুপারভাইজার তাকে জিজ্ঞেস করে যে তার সাথে যাবে কিনা। মেয়েটা রাজি হয়ে তার সাথে তার বাড়িতে চলে আসে।
সুপারভাইজার সাহেবের দুই মেয়ে একছেলে। ছেলেটা প্রতিবন্ধী। বড় মেয়ে সন্তানসম্ভবা হওয়ায় তার স্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন। মেয়েটি সেই বাড়িতে গিয়ে বাড়ির মেয়ের মতো মিশে গেল। রান্নাবান্না ঘরকন্না সবই করছিল।
বিষয়টা যে থানাতে অবগত করা উচিৎ তা সুপারভাইজার বা তার পরিবারের কারো মাথাতেই আসে নাই। দশদিন পর তাদের কানে পানি যায়। বিষয়টা সজলকে জানালে সজল তাদের নিয়ে আমার অফিসে আসে।
আমি মেয়েটির সাথে কথা শুরু করলাম। খুবই লাজুক, কথাই বলতে চায় না। কোন রকমে তার মুখ দিয়ে বের করালাম তার নাম, পিতার নাম। তার বাড়ি ময়মনসিংহের আরোংবাজ। সাথে সাথে ওসি কোতোয়ালি ময়মনসিংহের সাথে কথা বললাম। তিনি খুব দৃঢ়তার সাথে বললেন এই নামে ময়মনসিংহ সদরে কোন জায়গা নাই। ফুলবাড়ি ফাড়ির ইনচার্জ আমবারকে বললাম খোঁজ নিতে। সে অনেকদিন সেখানে ছিল। সেও খোঁজখবর নিয়ে বলল এই নামের কোন জায়গা ময়মনসিংহে নাই।
মেয়েটির সাথে আবার কথা বলা শুরু করলাম। এবার তার কাছ থেকে জানলাম সে একটা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। মাদ্রাসার নাম নারায়ণডহর। জিজ্ঞাসা করলাম আশেপাশে বড় কোন বাজার আছে। সে বলল পূর্বধলা বাজার আছে। গুগল ম্যাপের সহযোগিতায় নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার পাশে নারায়ণডহর পাওয়া গেল।
ফোন করলাম ওসি পূর্বধলাকে। খুলে বললাম ঘটনা। তিনি একটু সময় নিলেন। কিছুক্ষণ পর ফোন করে বললেন ১৯ জানুয়ারি একটা মিসিং জিডি হয়েছে। ভিক্টিমের নাম মিলে গেল কিন্তু বাবার নাম মিলল না।
মেয়েটিকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলাম। এবার আমার সাথে যোগ দিলেন ওসি সদর জনাব এসএম বদিউজ্জামান। দুজনের সম্মিলিত জিজ্ঞাসাবাদে সে বাবার নামের কথা স্বীকার করল, কেন বাড়ি থেকে পালিয়েছে তাও বলল। আবার ফোন করলাম ওসি পূর্বধলাকে। জানালাম সবকিছু। তিনি মেয়েটির বাড়িতে খবর দিলেন।
২৭ তারিখ সন্ধ্যায় মেয়েটির বাবা তার সাথে দুইজন লোক নিয়ে থানায় এসে হাজির। বাবা মেয়ের মিলন হলো, সৃষ্টি হলো এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। বাবার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি গাজীপুরে একটা ছোট চায়ের দোকান চালান, তার স্ত্রী গার্মেন্টসে কাজ করে। মেয়েটা তার দাদার সাথে গ্রামের বাড়ি লাউজানা, পূর্বধলায় থাকে।
দাদা বকা দেয়ায় সে অভিমান করে মা বাবার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে ভুল করে বগুড়ার গাড়িতে উঠে পড়ে। বাবার ভাষ্য অনুযায়ী মেয়েটা হারানোর পর থেকে তাদের বাড়িতে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে মানবেতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
(ছবিতে মেয়েটিকে তার বাবার সাথে এবং আমার সাথে দেখা দেখা যাচ্ছে, বাবা মেয়ের অনুমতি নিয়ে তাদের ছবি প্রকাশ করা হলো)
বগুড়া উত্তর ডটকম: বগুড়ায় পুলিশ সেবা সপ্তাহ-২০১৯ পালন করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০ টায় বেলুন উড়িয়ে পুলিশ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা। উদ্বোধন শেষে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে শহীদ খোকন পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শোভাযাত্রায় জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা বিভাগ ও ট্রাফিক পুলিশের প্রায় ৪ শতাধিক পুলিশ সদস্য অংশ নেয়। পাশাপাশি জেলা মোটর শ্রমিকের নেতাকর্মীরাও শোভাযাত্রায় যোগদান করেন। এবারের পুলিশ সপ্তাহ রবিবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে আগামী ২ ফেব্রুয়ারী-২০১৯ পর্যন্ত চলবে।
‘পুলিশকে সহায়তা করুন, পুলিশের সেবা গ্রহণ করুন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শোভাযাত্রায় এসময় জনসাধারণের কাছে পুলিশের নানামুখি সেবা সমূহ উপস্থাপন করা হয়। সেবা সমূহের মাঝে প্ল্যাকার্ডে উল্লেখযোগ্য ছিল- জনতার পুলিশ, আপনার থানা, আসতে যেতে নেইকো মানা, পুলিশ জনতা সবাই মিলে সমাজ গড়ি তিলে তিলে, টিপলে ফোনে তিনটি ৯৯৯ এসে হাজির হয়, থানার জিডির মাধ্যমে সেবা প্রদান, আইন মেনে চলুন,
নিরাপদ দেশ গড়ে তুলুন, ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, দূর্ঘটনা প্রতিরোধ করুন, মাদককে না বলুন, যৌতুক দিবেন না, যৌতুক নিবেন না, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করুন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করুন,যে কোন জরুরী অবস্থায় ৯৯৯ (টোল ফ্রি) এ ডায়াল করুন, জঙ্গী কর্মকান্ডে প্রতিরোধে পুলিশকে সহায়তা করুন ইত্যাদি। এছাড়াও জনসাধারণের জন্য পুলিশের বিভিন্ন কাজ নিয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
বগুড়া উত্তর ডটকম: ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মাছের মেলা: লোভনীয় বড় বড় মাছের এক বিশাল প্রদর্শনীমাছের মেলা! নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে বড় বড় মাছের কাল্পনিক সব সংগ্রহ। এ কল্পনাকে বাস্তবে নিয়ে আসে প্রতি বছরের শীতের শেষে অনুষ্ঠিত বগুড়ার পোড়াদহের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা।
এ যেন কেবল একটি মেলা নয় বরং তার চেয়েও বেশী কিছু। নামে মাছের মেলা হলেও কী নেই এতে! বড় বড় আর লোভনীয় মাছের বিশাল সংগ্রহ, প্রদর্শনী আর বিকিকিনি, সংসারের যাবতীয় প্রয়োজনীয় উপকরণ, বিনোদনের জন্য সার্কাস, নাগরদোলা, পালাগান ইত্যাদি। কিন্ত এ সবকিছু ছাপিয়ে যায় যখন এ মেলা লক্ষ মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ লেখায় রইল এ মেলারই আদ্যপান্ত।
স্থান:
পোড়াদহ বটতলা, গোলাবাড়ী, মহিষাবান, গাবতলি, বগুড়া।সময়কাল ও ব্যাপ্তি:প্রতি বঙ্গাব্দের মাঘ মাসের শেষ তিন দিনের মধ্যে আগত বুধবার অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার। তবে এই বুধবারের আগের ০৩ দিনের সাথে পরের ০২ দিন পর্যন্ত এ মেলা চলতে থাকে। উল্লেখ্য যে মেলার প্রধান দিন, বুধবারের পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বসে বৌমেলা। এদিন কেবল বিভিন্ন গ্রামের নববধূরা এবং স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা কন্যারা তাদের স্বামীদের সাথে মেলায় আসেন।
প্রকৃতি ও বিবরণ:
মেলার অন্যতম আকর্ষণ বিভিন্ন প্রজাতির বৃহদাকৃতির মাছ। নানা প্রজাতির বড় বড় মাছ এখানে পাওয়া যায়; বিশেষ করে নদীর বড় বড় বাঘাইর, আইড়, বোয়াল, কাতলা, পাঙ্গাস, সামুদ্রিক টুনা, ম্যাকরেল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেচা-কেনা হয়। তবে চাষকৃত বিভিন্ন ছোট বড় আকারের মাছও পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।
মেলা চলাকালে একসাথে প্রচুর বড় ও জীবিত মাছ পাওয়া যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানকালে জানা যায়, এ এলাকার অনেক মৎস্যচাষী কেবল মেলায় অধিক লাভে বড় মাছ বিক্রয়ের জন্য মাছ বড় করেন। তাছাড়া মেলায় বিক্রয়ের জন্য বেশ আগে থেকেই নদীতে ধৃত বাঘাইর, আইড় ইত্যাদি মাছ স্থানীয় পুকুরগুলিতে বা অন্য জলাশয়ে হাপা করে বা বেঁধে রাখা হয়। আবার মেলা চলাকালে পার্শ্ববর্তী গোলাবাড়ী আড়তে আসা মাছবাহী গাড়ীগুলি সরাসরি মেলাতেই চলে আসে, মেলা থেকেই বাইরের বিক্রেতারা মাছ সংগ্রহ করেন।
মেলার সময় অতিথি ও ঝি-জামাই আপ্যায়নের জন্য বড় মাছের ব্যাপক চাহিদা থাকায় গাবতলীর অন্যান্য বাজারেও দেখা যায় বড় বড় মাছে একাকার। এছাড়াও কাঠের আসবাবপত্র, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী, লৌহজাত দ্রব্যাদি, ফলমূল, নানা ধরণের মিষ্টি ও মিষ্টিজাত দ্রব্য এবং প্রচুর চুন মেলায় পাওয়া যায়। তাছাড়া মেলা উপলক্ষে বিনোদনের জন্য সার্কাস, নাগরদোলা ও পালাগানের আয়োজন করা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের গ্রামগঞ্জের সবাই তাদের জামাই-ঝিকে নিমন্ত্রণ করেন ও বড় আকৃতির মাছ দ্বারা আপ্যায়ন করেন। কৃষকেরা প্রয়োজনীয় ঘরোয়া সামগ্রী ছাড়াও সারা বছরের পান খাওয়ার চুন পর্যন্ত মেলা থেকে সংগ্রহ করেন।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
মেলা শুরুর সঠিক দিন ক্ষণ জানা যায় না। তবে একাধিক সূত্র হতে জানা যায়, প্রায় চার শত বছর পূর্বে পোড়াদহ সংলগ্ন মরা বাঙালী (মতান্তরে মহিষাবান নদী) নদীতে প্রতি বছর মাঘের শেষ বুধবারে অলৌকিকভাবে বড় একটি কাতলা মাছ (মতান্তরে অজ্ঞাত মাছ) সোনার চালুনি পিঠে নিয়ে ভেসে উঠত। মাঘের শেষ বুধবারের এ অলৌকিক ঘটনা দেখার জন্য প্রচুর লোকজন জড়ো হত। পরে স্থানীয় একজন সন্ন্যাসী স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে অলৌকিক এ মাছের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য নিবেদনের জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন। সন্ন্যাসীর আহবানে সাড়া দিয়ে পোড়াদহ বটতলায় মাঘের শেষ বুধবারে অলৌকিক মাছের উদ্দেশ্যে স্থানীয় লোকজন অর্ঘ্য নিবেদন শুরু করেন।
কালক্রমে এটি সন্ন্যাসী পূজা নাম পরিগ্রহ করে। পূজা উপলক্ষে লোক সমাগম বাড়তে থাকে ও বৃহদাকৃতির মাছ ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য মেলাটি প্রসিদ্ধ হয়ে ওঠে।তবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে দেখা যায়, পোড়াদহ মেলার এ স্থানটি একটি প্লাবনভূমি এবং ভৌগোলিকভাবে এটি নদী, খাল ও বিলের মোহনা অঞ্চলে অবস্থিত।
এখান থেকে বেশ নিকটেই আছে রানীরপাড়া মৌজাধীন কাতলাহার বিল ও ঢিলেগারা বিলসহ পোড়াদহ খাল ও মরা বাঙালী (মহিষাবান) নদী। ফলে অতীতে এটি যে যমুনার সাথে খুব ভালভাবে সংযুক্ত ছিল তা সহজে অনুমেয়। বর্ষাকালে বিভিন্ন নদীপথে আগত প্রচুর মাছ এখানে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জলবায়ুগত পরিবর্তনে মাঘের শেষে এখানকার পানি প্রায় শুকিয়ে আসায় তখন এখানে থেকে যাওয়া কোন বড় কাতলা মাছের বৃত্তাকার আঁইশ সোনার চালুনির মত মনে হতে পারে। কেননা দেশী বড় কাতলা মাছের আঁইশ বেশ সোনালি বর্ণ ধারণ করে, অল্প পানিতে সাঁতরানো অবস্থায় রোদের ঝিলিকে তা কোন ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসীর কাছে আরো আকর্ষণীয় স্বর্ণের চালুনির মত মনে হতেই পারে।
সড়ক যোগাযোগের পথ: ঢাকা (A) থেকে বগুড়া (B) পর্যন্ত ২০২ কিমি এবং বগুড়া (B) থেকে চেলোপাড়ার ফতেহ আলী ব্রিজ (C) হয়ে চন্দনবাইসা রোড ধরে গোলাবাড়ি বাজারের পর পরেই মেলাস্থল পোড়াদহ (D) পর্যন্ত ১২.৭ কিমি।
যোগাযোগের ব্যবস্থা:
বগুড়া হতে সরাসরি বাসে অথবা অটোরিক্সায় পোড়াদহ আসা যায়। মেলা চলার সময় বগুড়া হতে বাসে বা অটোরিক্সায় প্রথমে গোলাবাড়ি পর্যন্ত এসে পুনরায় অন্য অটোরিক্সা বা রিক্সাযোগে পোড়াদহ মেলা স্থলে আসা যাবে।
ঢাকা থেকে ভাল মানের বাসে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টায় বগুড়ায় আসা যায়। যাদের হাতে সময় কম তারা রাতের শেষ বাসে রওনা দিয়ে ভোরে বগুড়ায় পৌঁছে বাস বদল করে সকাল সকাল মেলা স্থলে পৌঁছে যেতে পারবেন এবং দিন শেষ বগুড়া ফিরে ঐ রাতেই ঢাকায় ফিরতে পারেন। তবে হাতে সময় নিয়ে আসলে মাছের মেলার পাশাপাশি দেখে যেতে পারবেন বাংলার প্রাচীন নগরী পুণ্ড্রবর্ধন যা বর্তমানে মহাস্থানগড় নামে পরিচিত।
গুরুত্ব:
ঐতিহ্যবাহী এ মেলা সকল ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও মতের মানুষের এক মহামিলন কেন্দ্র। এটি হাজারো কাজের ব্যস্ততায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া লক্ষ মানুষের বছরে অন্তত একটি বারের জন্য হলেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়।
অর্থনৈতিকভাবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতি বছর এ মেলায় কোটি টাকার বেশী লেনদেন হয় এবং লেনদেনের একটা বড় অংশ উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত গামী হওয়ায় এর গুরুত্ব আরও অনেক বেশী হয়ে দেখা দেয়।
বগুড়া উত্তর ডটকম: (রাহেনূর ইসলাম স্বাধীন) : বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া বাজারে একটি কম্পিউটার সর্ভিসিং দোকানে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার ভোরে হাসনাপাড়া বাজারের পঙ্কজের কম্পিউটার সার্ভিসিং এবং মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে এঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে এলাকাবাসী ধারনা করছেন যে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত।
এদিকে এঘটনায় প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে দাবী করেছেন দোকানের পরিচালক পঙ্কজ মিয়া।
বগুড়া উত্তর ডটকম: (এস আই সুমন) : বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান দই- মিষ্টি ও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রায় ১৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকা অনুমান করলেও এলাকাবাসীরা অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, শনিবার ভোর ৫টায় মহাস্থান মাছ বাজারের পাশে দই মিষ্টির দোকানের একটি চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এরপর আগুন মুহুর্তই পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্থ্য ব্যবসায়ীরা হলো মীর আলম, আমিনুর ইসলাম, মিষ্টার, ফারুক, আনিছার।
পরে স্থানীয়রা শিবগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। খবর পেয়ে প্রথমে শিবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এসময় তাদের রিজার্ভকৃত পানি ফুরিয়ে গেলে তারা বগুড়া সদর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। এরপর বগুড়া সদর ফায়ার সার্ভিস ও শিবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট মহাসড়কের পাশে একটি ডোবা থেকে তাদের সরঞ্জাম দিয়ে পানি উত্তোলণ করে। তারা প্রায় দেড় ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।
এবিষয়ে শিবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হামিদ জানান, রাত সাড়ে ৫টায় সংবাদ পেয়ে আমাদের ইউনিট আগুন নিভাতে আসে। কিন্তু আমাদের মজুদ পানি শেষ হলে আগুন নিভাতে হিমশিম খেতে হয়। বগুড়ার ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ইনচার্জ সরোয়ার হোসাইন জানান, আগুন পুরো মার্কেটে লাগার কারণে অনেক দুর থেকে পানির সংযোগ দিয়ে আগুন নিভাতে হয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, মহাস্থান একটি ঐতিহাসিক এলাকা।
এখানে অনেক দোকানপাট ও বসতবাড়ি রয়েছে। অতচ এখানে নিরাপত্তার স্বার্থে আগুন নিয়ন্ত্রণের পানি রিজার্ভের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। তিনি মহাস্থান হাট ইজারাদার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা রক্ষার্থে পানি বোরিং রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে নিজেদের একমাত্র রুজির পথ শেষ পুঁজি হারিয়ে ব্যবসায়ীদের মাটিতে লুটিয় আহাজারি করতে দেখা গেছে। অনেকেই এখন সরকারি অনুদান আশা করছেন। অগ্নিকান্ডের কারণে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে প্রায় ১ঘন্টা সকল যানচলাচল বন্ধ ছিল। এলাকাবাসীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
বগুড়া উত্তর ডটকম : বগুড়ায় ৪ ঘন্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে ৩ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া সদর থানা পুলিশ। এসময় ভিকটিমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। শহরের রহমান নগর এলাকার বর্তমান সাং-খান্দার নতুনপাড়া (চাপড় পাড়া) এলাকার আবুল কালাম এর ছেলে রেজাউল ইসলাম ওরফে রিয়াদ (২৪) ২। মালগ্রাম দক্ষিনপাড়া এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী ওয়াহেদ ফারুকী ওরফে মেঘ (১৯) ৩। একই এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে সজিব (২৫)। অভিযান কালে অপর আসামী খান্দার চারতলা এলাকার সামাদ হোসেন এর ছেলে সোহেল রানা (২৬) পালিয়ে যায়।
থানা সূত্রে জানা যায়, নন্দীগ্রাম থানার দামরুল এলাকার রফিকুল ইসলাম এর ছেলে সাকিবুল ইসলাম (২০) শনিবার প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিআইআইটি কলেজে তার সেউজগাড়ীস্থ মেস হতে রিক্সা যোগে যায়। পরীক্ষা শেষ করে মেসে ফেরার পথে দুপুর ১.৩০ টার সময় খান্দার তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছা মাত্র অপহরণকারীরা তার পথরোধ করে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই অপহরণকারীরা সাকিবুলের মুক্তিপনের জন্য মোবাইল ফোনে ১ লক্ষ টাকা তার পরিবারের কাছে দাবি করে। ছেলের জীবন বাঁচাতে তারা বিকাশে ৩০ হাজার টাকা অপহরণকারীকে দেয়।
এঘটনায় সাকিবুলের পিতা রফিকুল ইসলাম বিষয়টি সদর থানার ওসিকে জানালে এস.আই সোহেল সহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স তাৎক্ষনিক অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার করে ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার ওসি এস. এম বদিউজ্জামান সাংবাদিকদের জানান অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।