ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একটি ছেলে আত্মহত্যা করেছে।
আত্মহত্যার কারন ডিপ্রেশন। পরীক্ষায় ফেল করেছে কয়েকবার। স্যারদের অপমান, হ্যাংলা পাতলা গায়ের রং নিয়ে বন্ধুরা হাসাহাসি করতো।
ছয়তালা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ভালো করেছে। এই নষ্ট সমাজ, নষ্ট শিক্ষা ব্যবস্থার ভেতর একজিস্ট না করাই বেটার। রুমে সবার সামনে ছাত্রকে অপমান করতে পারা অনেক স্যারদের কাছে একটা বিকৃত আনন্দের বিষয়।
ছেলেটা ডিপার্টমেন্ট চেঞ্জ, সাবজেক্ট বদল করতেও চেয়েছিলো। আর জাতি হিসেবে আমরা রেসিস্ট। গায়ের রং নিয়ে আমাদের ভেদাভেদ করা, পচানো, কটূক্তি করা একটা ফ্যাশন।
বৃটিশরা শাদা চামড়ার লোভ আমাদের রক্তের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে। আর আমাদের দেশে টিচার স্টুডেন্ট রিলেশনশিপ?
আমার সার্জারি ডিপারট্মেন্টে পারসেন্টেজ ছিলো না। আমি পুনরায় ক্লাস করতে চাই, জাস্ট এই পারমিশন নিতে আপ্লিকেশন নিয়ে ডিপার্টমেন্ট হেডের কাছে গিয়েছি। শ্রদ্ধেয় স্যার আমাকে গুনে গুনে ৬ বার বের করে দিয়েছে তার রুম থেকে।
এইটা তার ক্রেডিট। হয়তো সে গল্প করতো, আমি এভাবে বের করে দেই। এভাবে নষ্ট হয়েছে এক মাস। শেষে গার্জিয়ান ডাকিয়ে বলেছিলো, 'এমন ছেলে আমার হলে সে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিতেন।'
আব্বা খুব মন খারাপ করছিলো সেদিন। আমার পারসেন্টেজ কম সে কারনে না, আমাকে এই স্যারের সাথে প্রতিদিন ক্লাস করতে হবে, এর হাতে প্রফ দিতে হবে এগুলো ভেবে। কেমন স্যার, যে ছাত্রর মৃত্যুর কথা বলে অবলীলায়?
অথচ সেদিন যদি স্যার শুধু বলতেন, তুই চেষ্টা কর। তুই পারবি। কি এমন ক্ষতি হত? আমাদের দেশের স্যারদের গুটিকয়েক পছন্দের ছাত্র থাকে। স্যাররা তাদের নিয়েই ভাবে সারাদিন। পিছিয়ে পড়া ছেলেটা হয়ে যায় বেমানান। খুবই অপছন্দের।
কয়েকদিন আগেও শুনলাম এক মেয়ের কথা। মেডিকেল পড়ুয়া। আমার নিজের সিনিয়র ভাই আত্মহত্যা করেছে কমুনিটি মেডিসিনে টানা ফেল করে। আত্মহত্যার পরের দিন কমুনিটি মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট হেড এসে লেকচারে বলে, ' শুনলাম কে মারা গেছে, আর দোষ আমার ডিপার্টমেন্টের।
চাপ না নিতে পারলে ভর্তি হয় কেন? আমি করিয়েছি ভর্তি?' কোন সহানুভূতি নেই কন্ঠে, কোন দুঃখবোধ নেই। মৃত্যুর পরও যাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হয়, বেঁচে থাকা অবস্থায় তাকে কি পরিমাণ অপমান সইতে হয়েছে তাহলে ?
সবাই ফাইট করতে পারে না। সবার মন এক না। আমি পেরেছি। সার্জারি ডিপার্টমেন্টের হেড এখন কাগজে কলমে আমার কলিগ। স্যারকে একদিন বলবো, স্যার, পা মাটিতে ফেলে দেইখেন একদিন। একটা দিন একজন ছাত্রের মাথা হাত রাইখা সাহস দিয়েন সামনে যাবার।
এগুলা খুন, আত্মহত্যা না। একটা ছেলের বা মেয়ের, মেডিকেল, ডিইঊ পর্যন্ত আসতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে ভেবে দেখেছেন? তার ফ্যামিলি কতটা কষ্টে এখানে এনেছে। বিনিময়ে কি পাচ্ছে?
একটা জীবনের মুল্য। দে আর জাস্ট মারডারিং ইনোসেন্ট স্টুডেন্টস। প্রতিদিন মারছে, মানসিক ভাবে পঙ্গু করে দিচ্ছে ।
ক্রেডিট: Tanzir Islam Bitto
ছবিটিতে ছেলেটি বুলিং, র্যাগিং এর স্বীকার হওয়া অবস্থায় তুলেছে তারা তাকে নিয়ে মজা করার। (তথ্যসূত্রঃ ফেসবুকে তার পরিচিত লোকজন)
#FROM_INBOX