বগুড়ার ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দলীয় মনোনয়ন এবং নির্বাচনে জনসমর্থন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সক্রিয় রয়েছেন।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক টিআইএম নূরুন্নবী তারিক, সাধারণ সম্পাদক সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন, সহসভাপতি কুদরত-ই খুদা জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম খাঁন, এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা এম.এ তারেক হেলাল, উপজেলা আ.লীগ নেতা মাসুদুল হক বাচ্চু ও জেলা পরিষদের সদস্য আ.লীগ নেতা ফজলুল হক।
অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল আলম মামুন এবং ধুনট পৌরসভার সাবেক প্রশাসক বিএনপি নেতা আকতার আলম সেলিম।
উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ সমর্থক হাফিজুর রহমান দুদু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তিনি আততায়ীদের গুলিতে নিহত হওয়ায় তাঁর পদটি শুন্য হয়। ১৯৮৮সালে ওই পদে উপ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতা মোজাম্মেল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। পরবর্তিতে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। ১৯৯০সালে দ্বিতীয় মেয়াদে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত নেতা মুঞ্জুরুল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ২টি ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আ.লীগ মনোনিত প্রার্থী টিআইএম নূরুন্নবী তারিক, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন ও নাজনীন নাহার নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে ওই তিনটি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। বর্তমানে বিএনপি নেতা তৌহিদুল আলম মামুন চেয়ারম্যান, জামায়াত নেতা রেজাউল করিম বাচ্চু ও বিএনপি নেত্রী নূরজাহান আক্তার রিক্তা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আসন্ন নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মহসিন আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি সাইফুল ইসলাম ও ধুনট ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ফেরদৌস আলম শ্যামল। অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া নিগার সুলতানা ডরথী ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পপি রানী। এ দু’টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বিএনপি-জামায়াতের কাউকে সক্রিয় পাওয়া যায়নি।
এবারের নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের তিনটি পদ দখলে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে দলীয় একক প্রার্থী দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় দলটি। আর এ কারনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নেই। সম্ভাব্য প্রার্থীদের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে হ্যাভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দেখছেন দলের নেতাকর্মীরা। তবে নির্বাচনকে ঘিরে মাঠ গুছিয়ে নিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকন। দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের মাঝে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
সম্ভাব্য প্রার্থী আব্দুল হাই খোকন বলেন, ২০০৯ সালে নির্বাচিত হয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। যার কারনে দীর্ঘদিন যাবত ধুনট উপজেলা তৃনমুল পর্যায়ের মানুষের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গীকার থেকে মানুষের কল্যানে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও নৌকার বিজয় হবে।
সম্ভাব্য প্রার্থী তৌহিদুল আলম মামুন বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। তবে নির্বাচনী মাঠ গুছিয়ে নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাজ করছি। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনি আবারো নির্বাচিত হবেন বলে প্রত্যাশা করেন।
....