গোলাম রব্বানী শিপন মহাস্থান প্রতিনিধি, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮: বিনম্র শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানে সদ্য নব নির্মিত স্মৃতিসৌধে পালিত হলো মাতৃভাষা দিবস।
কিন্তু দুঃখের বিষয় সারা বাংলাদেশে মাতৃভাষা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করলেও আমার মনে হয় আজ কেউ সহজে বলতে পারবেন না বাংলা পঞ্জিকা হিসাবে কত তারিখ? অামার ধারনা অনেকেই জানেন না।
অাজ বাংলা পঞ্জিকা অনুশারে ফাল্গুন মাসের ৯ তারিখ। অর্থাৎ বাংলা ১৪২৪ সালের ৮ই ফাল্গুন। (মতান্তরে ৯ই ফাল্গুন, লীপ ইয়ারের কারনে পরবর্তীতে বাংলা এবং ইংরেজি তারিখ বিভ্রাট ঘটে) যে মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, রফিক, সফিক, সালাম, বরকাতসহ অারোও নাম না জানা কত বীর।
কখনোও কি ভেবে দেখেছেন অামাদের বাংলার বীর ভাষা সৈনিকেরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিল মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু নিয়তির কি নির্মম পরিহাস অামরা এ দিনটি অাজ পালণ করি ইংরেজি ক্যালেন্ডার হিসাবে। তাই অামাদের সবার অাজ এই মহান দিনে দাবি থাক ২১ সে ফ্রেরুয়ারীর পাশাপাশি ৯ই ফাল্গুন সমান ভাবে প্রচার হোক এবং প্রচার পাক।
(অাজ ৯ ফাল্গুন) ২১ ফ্রেরুয়ারী সেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করছে বাঙ্গিজাতি। (একুশে ফ্রেরুয়ারী) বাংলাদেশের জনগনের গৌরব, উজ্জলময় বিশ্ব ইতিহাসের বিরল একটি দিন।
অাজকের এই মহান দিন উদযাপন উপলক্ষ্যে সারাদেশের মত বগুড়ার মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রী কলেজ চত্বরে নব স্মৃতিস্তম্ভে শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও বর্ণাঢ্য র্যালীতে নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন, বগুড়ার- ২ শিবগঞ্জ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তি যোদ্ধা আলহাজ্ব শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ।
এছাড়াও অংশগ্রহণ করেন, শিক্ষক, শিক্ষিকা, ছাত্র- ছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সামাজিক সংগঠন, ব্যবসায়ী মহল সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। বুধবার ২১ ফ্রেরুয়ারী সকালে মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রী কলেজ শহীদ মিনার গিয়ে দেখা যায়, হাতে হাতে ফুল নিয়ে জড়ো হচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে হাজারো জাতির ঢল নামে মহাস্থান শহিদ মিনার মাঠ। এরপর সকাল সাড়ে ৮টায়, মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রী কলেজ, হাইস্কুল, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্থানীয় সু-নাম ধন্য মোর্নিং সান কেজি স্কুল, ইকরা মডেল, এবং মোকবুল হোসেন অাদর্শ কেজি স্কুলের যৌথ ব্যানারে শহীদদের স্মরনে একটি বিশাল র্যালী বের হয়।
র্যালীটি মহাস্থান মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে অাবারো শহিদ মিনার চত্বরে গিয়ে সমাবেত হয়। এরপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একে একে সবাই শহীদদের প্রতিশ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারস্তম্ভে ফুল অর্পণ করেন।
এর অাগে প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তি যোদ্ধা আলহাজ্ব শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। এছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এসময় শহিদ মিনারে উপস্থিত বাংলা ভাষা প্রেমীদের মুখে একটাই ধ্বনি ছিলো, যারা মায়ের ভাষাকে বিশ্বের বুকে পরিচয় করে দিয়েছে, আমরা তাদের ভুলবো না। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকল শহীদদের প্রতিশ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য শহীদ মিনারে আসেন তারা। তাদের মুখে তখন একটাই স্লোগান ছিল, “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফ্রেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি”।
No comments:
Post a Comment