Tuesday, February 20, 2018

বগুড়ার শাজাহানপুরে মাদ্রাসা ছাত্রীর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা

শাজাহানপুর প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান: বগুড়ার শাজাহানপুরে সানু আকতার নিশি (১৩) নামের এক মেধাবী মাদ্রাসা ছাত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।


সোমবার দিবাগত রাত ৮ টার দিকে উপজেলার শৈলধুকড়ি পূর্বপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। নিশি শুকনা মরিচ ব্যবসায়ী নান্টু মিয়ার বড় মেয়ে।

সে শৈলধুকড়ি আয়েজ উদ্দিন ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে থানার এসআই মাসুদ রানা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল তৈরী করেন এবং পোস্টমর্টেমের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠান। তবে আত্মহত্যার সঠিক কারন উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

এঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিশির মা সালমা বেগম জানান, নিশির বাবা শুকনা মরিচের ব্যবসা করেন। ব্যবসার কারণে সে মাসে ২০-২৫ দিন বাড়ির বাহিরে থাকেন।

প্রায় ১ মাস পূর্বে নিশির দাদী মারা যায়। নিশি তার দাদীকে খুব বেশী ভালবাসতো। দাদী মারা যাওয়ার আগে দাদীর খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় দেখাশোনা নিশিই করতো।

দাদী মারা যাওয়ার পর মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে নিশি। দাদীর ঘরেই নামাজ ও কোরআন তেলাওয়াত করতো নিশি। সোমবার সন্ধায় দাদীর ঘরে মাগরিবের নামাজ ও কোরআন তেলাওয়াত শেষে তার ঘরে এসে মা ও ছোট বোনের সাথে টিভি দেখছিল।

একপর্যায়ে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে নিশি ঘর থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে ফিরে না আসায় খুজতে গিয়ে নিশিকে তার দাদীর ঘরের তীড়ের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখে তার মা।

ততক্ষনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নিশি। নিশির বাবা নান্টু মিয়া আহাজারি করে বলেন, আমার মা (নিশির দাদী)’ই আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে।

মা মারা যাওয়ার কিছুদিন পর রাতে ঘুমের ভিতর স্বপ্নে মা এসে গালে চড় দিয়ে বলে তোর মেয়েকে দে। আমাকে ঔষধ খাওয়াবে কে। মা ই আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে।

অপরদিকে নিশির মাদ্রাসার শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা জানান, নিশি একজন মেধাবী, ন¤্র, ভদ্র ও পর্দানশিন মেয়ে ছিল। সব সময় মাথা নিচু করে চলাফেরা করতো।

তার সম্পর্কে অশালিন কোন কথা বা কর্মকান্ড কোনদিন কারো চোখে পড়েনি। এরকম একটি মেয়ে হঠাৎ করে আত্মহত্যা করায় শিক্ষক, সহপাঠি ও প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

থানার এসআই মাসুদ রানা জানান, লাশের প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার প্রমান পাওয়া গেলেও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। তবে আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি।
বগুড়া সংবাদ / Bogra News

No comments:

Post a Comment