Friday, February 9, 2018

খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন?

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তার আইনজীবীরা বলেছেন, তারা আপীল করবেন।
খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন?
   
তার দল বিএনপি বলেছে, এ রায়কে তারা আইনি ও রাজনৈতিক উভয়ভাবেই মোকাবিলা করবে। প্রশ্ন হচ্ছে, আদালতে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ার পর খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন?
নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ নিয়ে বিবিসির সাথে কথা বলেছেন।
তারা বলছেন, নির্বাচনে অংশ নেবার যোগ্যতা নির্ধারিত হয়ে বাংলাদেশের জন প্রতিনিধিত্ব আইনে।    আরো পড়ুন:
কারাগারে খালেদার প্রথম রাতের খাবারে ছিল মাছ-ভাত  এতে বলা হয়েছে, কেউ যদি কোনো 'নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে' দোষী সাব্যস্ত হয়ে দু'বছরের বেশি মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হন তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবার যোগ্যতা হারাবেন।

তবে মূল দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিত ব্যক্তি যদি উচ্চ আদালতে আবেদন বা আপীল করেন, এবং সেই আপীল বিচারাধীন থাকে তখনও নির্বাচনে লড়ার ওপর সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে কিনা এ বিষয়ে আইনে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে।  কর্মকর্তারা আরো বলছেন, কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি যখন নির্বাচনে প্রার্থী হবার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন, তখনই রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতা থাকে আইনি ব্যাখ্যা সাপেক্ষে এই মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা খারিজ করার।
মনোনয়নপত্র যদি কোন কারণে খারিজ হয়ে যায়, তাহলে সেই ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের কাছে আপীল করতে পারেন। কিন্তু সে আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ। এর নিষ্পত্তি হতে হতে নির্বাচন শেষ হয়েও যেতে পারে, বলেন ওই কর্মকর্তা।   কাজেই খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কারণ খুব নিশ্চিতভাবে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলছেন, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কিনা তার চাইতেও বড় প্রশ্ন হচ্ছে, নির্বাচনের সময় তিনি জেলের ভেতরে থাকবেন না মুক্ত থাকবেন।
আসিফ নজরুলের কথায়, খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না-ও পারেন। তবুও তিনি যদি জামিনে থাকেন এবং প্রচারাভিযানে অংশ নিতে পারেন, তাহলে এই কারাদণ্ড বিএনপির জন্য নেতিবাচক না হয়ে বরং ইতিবাচক হতে পারে।
তাই বেগম জিয়া নির্বাচনের সময় জামিনে মুক্ত থাকবেন কিনা এটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে, বলছিলেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল।  খালেদা জিয়াকে আসলে ঠিক কত দিন জেলে থাকতে হতে পারে?  রায়ের সত্যায়িত কপি হাতে পাবার পরই কেবল খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিলের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন এবং ততদিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া বন্দি থাকবেন।
এই রায়ের কপি পাবার কি কোন সময়সীমা আছে?   আইনবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক শাহদীন মালিক বলছেন, কোন সময়সীমা বাঁধা নেই। তবে সার্টিফায়েড কপির আগে টাইপ করা কপি যাকে বলা হয় ট্রু কপি, সেটা হয়তো আইনজীবীরা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই পেয়ে যেতে পারেন এমন কথা শোনা গেছে।
তাহলে তারা হয়তো আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি নাগাদই আপিল দায়ের করে দেবেন, হয়তো আপীলের সাথেই জামিনের আবেদনও করবেন।  আইনি প্রক্রিয়ায় যেটা হয়, নারীদের ব্যাপারে, বয়স বেশি হলে বা সাজা কম বলে- কারণ এটা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয় এবং পাঁচ বছরের কারাদণ্ডকে কম সাজাই বলতে হবে।
তাই এসব বিবেচনায় হয়তো আমার সাধারণ জ্ঞানের যেটা ধারণা হয়, জামিন হয়ে যেতে পারে। এক বা দু'সপ্তাহে ছাড়া পেয়ে গেলে এক অর্থে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও শুরু করতে পারবেন।
 সূত্র : বিবিসি বাংলা 

No comments:

Post a Comment