প্রশ্নফাঁস নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতর প্রশ্নের ছবি তুলে অনলাইনে পোস্ট করার চেষ্টার সময় এবার বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে হাতেনাতে আটক হয়েছেন একজন শিক্ষক।
হাতেনাতে ধরা পড়া ওই শিক্ষকের না ওমর ফারুক। তিনি সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছিলেন্ ওমর ফারুক স্থানীয় জোরগাগাছা দাখিল মাদ্রাসার শরীর চর্চার শিক্ষক। পরীক্ষা কেন্দ্রে কেন্দ্র প্রধান ছাড়া অন্য কারও মোবাইল ফোন নেয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি কৌশলে ফোনটি নিয়ে যান।
ওমর ফারুক প্রশ্নের ছবি তুলে তা পাঠানোর সময় ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়া সারিয়াকান্দির এসিল্যান্ড আবদুল কাদির তাকে ধরে ফেলেন। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিতভাবে সাজা না দিয়ে তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে এসিল্যান্ড আবদুল কাদির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের শাস্তি সীমিত। কিন্তু এই অপরাধ গুরুতর। তার বড় সাজা দরকার। কাজেই ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেই পদক্ষেপ নেব।’
এর আগে সোমবার ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দুটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে প্রশ্নের ছবি তুলে বাইরে পাচারের সময় হাতেনাতে আটক হন চার শিক্ষক। পরের দিন তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দেয়া হয়েছে। এই শিক্ষকরা হলেন, প্লাবন ঘোষ, রইচ উদ্দিন, সালমান মাহমুদ এবং শাহিন ফকির।
গত কয়েক বছর ধরেই প্রশ্ন ফাঁস তুমুল আলোচিত বিষয়। নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরও সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষাতেও একই ঘটনা ঘটায় জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। এমনকি তিনি পদত্যাগ না করলে তাকে বরখাস্তের দাবিও করেছেন তিনি।
চাপের মুখে মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী তাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্ন ফেসবুকে এসেছে পরীক্ষা শুরুর ২৪ মিনিট আগে।
৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন এসেছে পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগে। পরদিন প্রশ্ন ফাঁস বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। তবে পরদিনই সামাজিক মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপে ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্ন এসেছে পরীক্ষা শুরুর দুই ঘণ্টা আগে। আর এদিনই ফরিদপুরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ধরা পড়েন চার শিক্ষক।
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে যারা প্রশ্ন ফাঁস করছে তারা এর বিনিময়ে কোনো টাকাই চাইছে না বা চাইলেও সেটা ২০০, ৩০০ টাকার মতো নগণ্য পরিমাণে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে বাণিজ্যির উদ্দেশ্য নেই এর পেছনে।
সুত্র: ঢাকাটাইমস/০৭ফেব্রুয়ারি/ প্রতিনিধি/ডব্লিউবি
সংবাদটি শেয়ার করুন
No comments:
Post a Comment