চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই শিক্ষক ও পাঁচ ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। নওগাঁ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার যৌথ দল
গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জেলার পত্নীতলা ও ধামইরহাট এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নওগাঁ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়। আটক
ব্যক্তিরা হলেন পত্নীতলার চকরঘু গ্রামের শিক্ষক আল মামুন (২৯), গুটিন গ্রামের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৩০), চকজয়রাম গ্রামের ছাত্র জাহিদ হাসান ইমন (১৬),
চকজয়রাম দক্ষিণপাড়ার প্রভাত কুমার মহন্ত (১৬), চকখিরসিন গ্রামের মর্তুজা আহমেদ (১৬), ধামইরহাটের আড়ানগর গ্রামের জহুরুল ইসলাম শাহিন (১৭) ও আক্কেলপুরের হাস্তাপাড়া গ্রামের ইসরাফিল আলম (১৬)।
তাদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলা করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রফিক বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেন।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ও এনএসআই পত্নীতলা উপজেলা নজিপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বাজারে পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত আশীর্বাদ নামক ছাত্রাবাস থেকে শিক্ষক আল মামুন ও তিন ছাত্রকে আটক করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের আটক করা হয়।
ওসি আবদুর রফিক আরো বলেন, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়। তাদের মোবাইল ফোনে বিগত দিনের পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়া গেছে। তারা এসব প্রশ্ন সংগ্রহ করে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের কাছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সরবরাহ করত।
আজ সারা দেশে এসএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা হয়। সেই বিষয়ের প্রশ্নও তাদের কাছে পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়; বিগত দিনের ইংরেজি, গণিত ও ধর্ম পরীক্ষার প্রশ্নও তাদের কাছে পাওয়া গেছে।
এদের গোড়া খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আটক শিক্ষক আনোয়ার ও আল মামুন জানান, ইন্টানেটের মাধ্যমে তারা পরীক্ষার আগের দিন রাতে অথবা পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেন।
এরপর বিভিন্ন পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্র নিতে প্রস্তাব দেন। বিকাশের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে ফেসবুকের মেসেঞ্জারে অথবা ই-মেইলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন। আগের পরীক্ষাগুলোতেও তারা প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন এবং একইভাবে বিতরণ করেছেন বলে স্বীকার করেন।
No comments:
Post a Comment